,

এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাহুবল উত্তাল

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনায় এর প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাহুবলের জনগণ। গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কর্মসূচি থেকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় মহাসড়ক ও রেল সড়ক অবরোধের মাধ্যমে সিলেট বিভাগ অচল
করে দেয়া হবে বলে হুশিয়ার করা হয়। গত শুক্রবার বিকেলে বাহুবল উপজেলার মিরপুরস্থ বেদে পল্লীতে আর্থিক অনুদান বিতরণ কালে হবিগঞ্জ-সিলেটের দায়িত্ব প্রাপ্ত সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী হামলার স্বীকার হন। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা সমাজসেবা অফিসারসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পরপর তিনি মিরপুর চৌমুহনীতে এসে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে হামলার বর্ণনা দেন। এ সময় বক্তব্য দেয়ার এক পর্যায়ে কেয়া চৌধুরী এমপি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে স্থানীয় বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে সেখানে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেণে রাখা হয়। গত শুক্রবার রাতে উপজেলা সদরে আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সাধারণ জনতা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করে। এদিকে, গতকাল শনিবার বাদ আছর বাহুবল বাজারে সচেতন জনতার ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাহুবল বাজারে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ফরিদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আহমেদ আওলাদ, সহ-সভাপতি শ্রমিক নেতা আসকার আলী, যুগ্ম সম্পাদক ও লামাতাসী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিববুর রহমান চৌধুরী টেনু, সাংগঠনিক সম্পাদক বশির আহমেদ, কেয়া চৌধুরীর ভাই এডভোকেট ফয়জুল বশির চৌধুরী সুজন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. আবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহিদ, উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক অলিউর রহমান অলি, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাহিদ আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মুছাব্বির শাহীন ও ফারুকুর রশিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হারুনুর রশিদ, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল, মামুনুর রশিদ, সাইফুর রহমান জুয়েল, সৈয়দ খলিলুর রহমান, আব্দুল কাদির বাবুল, ফরিদ মিয়া, মনির খান, ফজলুর রহমান ফজল ও ফেরদৌস আহমেদ হৃদয় প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, শুক্রবার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ইউএনও, ওসি’র উপস্থিতিতে সরকারি সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে কেয়া চৌধুরী এমপি সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার হলেন। এ ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে, আপনারা প্রশাসনের লোকজন কী করেছেন? নিশ্চয় উত্তরে ইতিবাচক কিছু করেছেন বলে দাবি করতে পারবেন না। প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রেখে বক্তারা বলেন, আপনারা দু®কৃতিকারীদের ধরবেন, না জনগণ আপনাদের ধরতে বাধ্য করার অপেক্ষা করবেন? যদি তা না চান তাহলে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের ধরে আইনের আওতায় আনে। অন্যথায় এ অঞ্চলের জনগণ মহাসড়ক ও রেল সড়ক অবরোধ করে সিলেট বিভাগ অচল করে দেবে। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষ সহস্রাধিক মানুষের অংশগ্রহণে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে দুপুর ২টায় মিরপুর আলিফ-সোবহান চৌধুরী কলেজের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-অভিভাবকরা দেড় কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে মানববন্ধন করে। গতকাল বাদ মাগরিব বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজার সংলগ্ন বিশ্বরোড পয়েন্টে অপর এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শ্রমিকনেতা আসকার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও লামাতাসী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু, কেয়া চৌধুরীর ভাই ফয়জুল বশির চৌধুরী সুজন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুকুর রশিদ, মিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নাজন মিয়া, পাঁচ গ্রামের মুরুব্বী দিদার আলী মাস্টার, পারভীন মেম্বার, আমির হোসেন মেম্বার ও মামুনুর রশিদ প্রমুখ। এছাড়াও শনিবার উপজেলার পুটিজুরী ও খাগাউড়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আজ রোববার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড বাহুবল শাখার যৌথ উদ্যোগে স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার প্রসঙ্গে বাহুবল মডেল ইনচার্জ মাশুক আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হামলার প্রতিবাদে বাহুবল, মিরপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন  হয়েছে। এবং আইনশৃংখলা রক্ষায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর